সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের ফজিলত
সুরা হাশর পবিত্র কোরআনের ৫৯তম সুরা। সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত (বাংলা উচ্চারণ) হলো:
অর্থ: তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়, পরম দয়াময়। তিনিই আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনিই মালিক, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, নিরাপত্তাবিধায়ক, তিনিই রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অহংকারের অধিকারী। ওরা যাকে শরিক করে আল্লাহ্ তার থেকে পবিত্র, মহান। তিনিই আল্লাহ্, সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা, সব সুন্দর নাম তাঁরই। আকাশ ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সমস্তই তাঁর পবিত্র মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, তত্ত্বজ্ঞানী। (সুরা হাশর, আয়াত: ২২ থেকে ২৪)
মদিনা থেকে দুই মাইল দূরে বনু নাজিরের বসবাস ছিল। তারা নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। একদিন নবী করিম (সা.) তাদের মহল্লায় গেলে তারা তাঁকে একটি ছাদের নিচে বসতে দেয়। পরে ছাদ থেকে পাথর গড়িয়ে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। আল্লাহ তাআলা ওহির মাধ্যমে তাঁকে এ বিষয়ে জানালে তিনি জায়গাটি থেকে সরে যান। নবী করিম (সা.) তাদের জানিয়ে দেন, ‘তোমরা চুক্তি ভঙ্গ করেছ। তোমাদের যেখানে ইচ্ছা চলে যাওয়ার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হলো। এরপর তোমাদের কাউকে পাওয়া গেলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।’
মুনাফিক সরদারের প্ররোচনায় তারা দেশ ত্যাগ করল না। নবী করিম (সা.) চতুর্থ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে তাদের পাড়া ঘেরাও করেন। নিরুপায় হয়ে তারা নতিস্বীকার করলে নবী করিম (সা.) আবারও তাদের সুযোগ দিয়ে বললেন, ‘অস্ত্র ছাড়া যতটা পারো জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে এখনই এলাকা ত্যাগ করো।’ আদেশ মেনে তারা দেশত্যাগ করল। কেউ চলে গেল খাইবার উপত্যকায়, কেউ সিরিয়ায়।
সুরাটির শেষ তিন আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তিনি আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তিনি পরম করুণাময়’।
সুরা হাশর মদিনায় অবতীর্ণ। এতে ৩টি রুকু এবং ২৪টি আয়াত রয়েছে। এই সুরায় ইহুদিদের নির্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
রাসুল (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি সকাল বেলা সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ ওই ব্যক্তির জন্য ৭০ হাজার ফেরেশতা নিযুক্ত করেন; যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। আর এ সময়ের মাঝে যদি লোকটি মারা যায়, তাহলে সে শহীদের মৃত্যু লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি এটি সন্ধ্যার সময় পড়বে, তারও একই মর্যাদা রয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৩০৯০)