আবু জাহেলের মা আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.): ইসলামের প্রথম যুগের সাহাবি
TufaniAnimator
প্রকাশ: 08 সেপ্টেম্বর 2024, 7.00
আবু জাহেল ছিলেন ইসলামের অন্যতম শত্রু। তার বাবার নাম হিশাম ইবনুল মুগীরা এবং মায়ের নাম আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.)। আবু জাহেলের বাবা হিশাম ছিলেন পৌত্তলিক এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নবুয়াত লাভের আগেই ইন্তেকাল করেন।
আসমা বিনতে মুখাররাবার প্রথম বিয়ে হয় হিশাম ইবনে মুগীরার সঙ্গে। এই স্বামীর ঘরে তাঁর দুটি ছেলে জন্ম নেয়: একজন আবু জাহেল এবং আরেকজন আল-হারিস। আল-হারিস ইবনে হিশাম ছিলেন রাসুলের সাহাবি। তবে প্রথম দিকে তিনিও তাঁর ভাইয়ের মতো ইসলামের বিরোধিতা করেন এবং বদর ও উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)–এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মক্কা বিজয়ের পর হারিস ইবনে হিশাম ইসলাম গ্রহণ করে সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন এবং ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত প্রায় সবগুলো যুদ্ধে ইসলামের পক্ষে অংশ নেন। আসমার প্রথম স্বামী হিশাম ইবনে মুগীরা ইন্তেকাল করলে, তিনি দেবর আবু রাবীয়া ইবনুল মুগীরার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) ইসলাম গ্রহণ করে রাসুলের সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। অথচ তাঁর গর্ভজাত ছেলে ছিল ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু! তিনি ইসলাম গ্রহণ করার পর তাঁর ছেলের সঙ্গে না থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।
ইসলাম গ্রহণ করার কারণে আবু জাহেল অন্যান্য সাহাবিদের ওপর নির্যাতন করত। দ্বিতীয় বিয়েতে আসমা (রা.)–র গর্ভে দুই ছেলে এবং এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা হলেন আইয়্যাশ ইবনে আবি রাবীয়া (রা.), আবদুল্লাহ (রা.), এবং উম্মে হুজাইর।
আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) মদিনায় বসবাস করতেন। তাঁর এক ছেলে আবদুল্লাহ থাকতেন ইয়েমেনে। তিনি ইয়েমেন থেকে মায়ের জন্য আতর পাঠাতেন। আসমা সেই আতর ঘরে থাকাকালে নিজে ব্যবহার করতেন এবং কিছু আতর বিক্রি করতেন। মদিনার নারীদের কাছে তাঁর আতর প্রসিদ্ধ ছিল। তখনকার যুগে সবচেয়ে ভালো আতর আসত ইয়েমেন থেকে। সে জন্য মদিনার নারীরা ভালো আতর কেনার জন্য আসমা (রা.)–র বাসায় যেতেন।
আসমা ছিলেন একদিকে আবু জাহেলের মা, আরেকদিকে সাহাবি আইয়্যাশ ইবনে আবী রাবীয়া এবং হারিস ইবনে হিশাম (রা.)–রও মা। আবু জাহেল সারা জীবন ইসলামের বিরোধিতা করে গেল এবং বদর যুদ্ধে সাহাবিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করল। অথচ তার মা আসমা, ছেলে ইকরিমা, মেয়ে জুয়াইরিয়া এবং আল-হুনফাসহ পরিবারের কয়েকজন ইসলাম গ্রহণ করেন।