Type Here to Get Search Results !

#in page push

আদম (আ.)–কে যে দোয়া শিখিয়ে দেন আল্লাহ

 আদম (আ.)–কে যে দোয়া শিখিয়ে দেন আল্লাহ


TufaniAnimator

প্রকাশ: 09 সেপ্টেম্বর 2024, 7.50


হজরত আদম (আ.) ছিলেন বিশ্বের প্রথম নবী। কোরআনে তাঁর নাম ১৯ বারের বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাঁকে সব বস্তুর নাম শিখিয়ে দেন। এরপর আল্লাহ ফেরেশতাদের সামনে বিভিন্ন বস্তু তুলে ধরে বলেন, “যদি তোমরা তোমাদের ধারণায় সঠিক হয়ে থাকো, তাহলে আমাকে এসব বস্তুর নাম বলে দাও।” ফেরেশতারা বলল, “হে আল্লাহ, আপনি পবিত্র। আমরা ততটুকুই জানি, যতটুকু আপনি শিখিয়েছেন। নিশ্চয় আপনি মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩১-৩২)

এরপর আল্লাহ ফেরেশতাদের আদেশ করলেন হজরত আদম (আ.)–কে সেজদা করতে। সব ফেরেশতা সেজদায় লুটিয়ে পড়ল, কিন্তু শয়তান সেজদা করল না।

আল্লাহ ফেরেশতাদের বললেন, “আমি পৃথিবীতে আমার একজন প্রতিনিধি প্রেরণের ইচ্ছা করছি।” ফেরেশতারা বলল, “হে আল্লাহ! আপনি পৃথিবীতে এমন সম্প্রদায়কে প্রতিনিধি বানাতে চাচ্ছেন, যারা মন্দ কাজ করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে। আমরাই তো আপনার প্রশংসা করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার তাসবিহ পাঠ করছি এবং পবিত্রতা বর্ণনা করছি।” ফেরেশতাদের এ কথা শুনে আল্লাহ তাআলা বললেন, “আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ৩০)

আল্লাহ হজরত আদম (আ.)-কে বললেন, “তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে থাকো এবং যা ইচ্ছা খাও।” এরপর একটি বিশেষ গাছ দেখিয়ে আল্লাহ বললেন, “তোমরা এর কাছেও যাবে না, অন্যথায় তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” এভাবে আল্লাহ পরীক্ষা করে দেখলেন, আদম (আ.) আল্লাহর কথা মানেন নাকি শয়তানের চক্রান্তে ফেঁসে যান।

শয়তান আগে থেকেই অখুশি ছিল, কারণ তার কারণে সে আল্লাহর দরবার থেকে বিতাড়িত হয়েছিল এবং আল্লাহর অভিশাপ তার ওপর পড়েছিল। তাই সে শপথ করেছিল, “আমি আদম (আ.) এবং তার সন্তানদের কিয়ামত পর্যন্ত পথভ্রষ্ট করতে থাকব, যাতে তারা আল্লাহর কথা না মানে এবং মন্দ কাজ করতে থাকে।”

ইবলিস হজরত আদম (আ.) এবং তাঁর স্ত্রী হজরত হাওয়া (আ.)-কে কুমন্ত্রণা দিতে লাগল, “তোমরা এই নিষিদ্ধ গাছের ফল খাও। এ গাছের ফল খেলে তোমরা মানুষ থেকে ফেরেশতায় রূপান্তরিত হবে এবং কখনোই জান্নাত থেকে বের হতে হবে না।”

শয়তানের কুমন্ত্রণায় পড়ে হজরত আদম (আ.) এবং হাওয়া (আ.) নিষিদ্ধ গাছের ফল খেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের শরীর থেকে জান্নাতের পোশাক খসে পড়ল এবং তারা গাছের পাতা দিয়ে নিজেদের শরীর ঢাকলেন।

আল্লাহ হজরত আদম (আ.)-কে বললেন, “আমি তোমাকে বলেছিলাম, এ গাছের কাছে যেও না এবং শয়তানের কথায় কান দিও না, কারণ সে তোমাদের শত্রু। কিন্তু তোমরা তার কথা শুনেছ এবং ফল খেয়েছ। এখন তোমরা জান্নাত থেকে বেরিয়ে পৃথিবীতে চলে যাও এবং সেখানেই বসবাস করো।”

জান্নাত থেকে বের হয়ে এবং শয়তানের কবলে পড়ে হজরত আদম (আ.) খুব দুঃখ পেলেন। দীর্ঘকাল আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। অবশেষে আল্লাহর দয়া হলো এবং তিনি হজরত আদম (আ.)–কে একটি দোয়া শিখিয়ে দিলেন, “হে আমাদের রব, আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন, তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।”

হজরত আদম (আ.) কেঁদে কেঁদে এই দোয়া করতে থাকেন। আল্লাহ অপরিসীম দয়ালু। হজরত আদম (আ.) তাঁর সন্তানদের অনবরত বোঝাতেন, “তোমরা কখনো শয়তানের কুমন্ত্রণায় কান দেবে না। সে আমাদের শত্রু। খারাপ কাজের জন্য সব সময় সে আমাদের প্রলুব্ধ করতে থাকে। আর শুনে রাখো, সব সময় আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর আনুগত্য করবে, সত্য বলবে। কারও ওপর জুলুম করবে না। ভালো কাজে একে অন্যকে সহযোগিতা করবে।”

আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনার পর হজরত আদম (আ.) এবং হজরত হাওয়া (আ.) দুনিয়ায় বসবাস করতে থাকেন। তাঁরা রাতদিন একাগ্রচিত্তে ইবাদতে নিয়োজিত থাকেন। তাঁদের অনেক সন্তান–সন্ততি জন্মগ্রহণ করেছিল।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Below Post Ad