সুরা ইয়াসিনে জীবন ও মৃত্যুর বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
TufaniAnimator
প্রকাশ: 07 সেপ্টেম্বর 2024, 7.00
সুরা ইয়াসিন মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি সুরা। রাসুল (সা.) বলেছেন, সুরা ইয়াসিন কোরআনের হৃদয় এবং এতে কোরআনের সারকথা রয়েছে। তিরমিজি শরিফে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি এক বসায় সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে, তার গুনাহ মাফ করা হবে। মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির শিয়রে সুরা ইয়াসিন পাঠ করা হয়।
সুরা ইয়াসিনে একটি প্রারম্ভিকা, তিনটি অংশ এবং একটি উপসংহার রয়েছে। প্রারম্ভিকায় আল্লাহ স্বল্প বাক্যে পুরো কোরআনের পরিচয় দিয়েছেন। সুরাটি ‘ইয়া-সিন’ দিয়ে শুরু হয়েছে। এরপর কোরআনকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘ওয়াল কোরআনিল হাকিম’, অর্থাৎ ‘বিজ্ঞানময় কোরআনের কসম’। এরপর নবী (সা.) সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘ইন্নাকা লামিনাল মুরছালিন’, অর্থাৎ ‘তুমি নিঃসন্দেহে রাসুলদের অন্তর্ভুক্ত’। রাসুল (সা.) সরল-সোজা পথ অবলম্বন করছেন এবং তিনি আমাদের পথপ্রদর্শক।
সুরা ইয়াসিনের প্রথম অংশে অতীতের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশে বর্তমানের নিদর্শন এবং আমাদের চারপাশের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা হয়েছে। তৃতীয় অংশে ভবিষ্যৎ এবং আমাদের পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যার মধ্যে কিয়ামত, জান্নাত ও জাহান্নামের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।
প্রতিটি অংশে মৃত ব্যক্তির পুনরুত্থান এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এটিই সুরা ইয়াসিনের মূল শিক্ষা। এই কারণেই মৃত্যুপথযাত্রীর সামনে সুরা ইয়াসিন পড়ার ওপর এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে ব্যক্তির রুহ শরীর থেকে আলাদা হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে পারে।
সুরা ইয়াসিনের ভূমিকা অংশে জীবন ও মরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম অংশে যে ঘটনার কথা এসেছে, সেখানেও জীবন ও মৃত্যু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মধ্যভাগে আল্লাহ আমাদের চারপাশের নিদর্শন উল্লেখ করেছেন। এখানে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে: প্রথমত, নিষ্প্রাণ ভূমি, অর্থাৎ পৃথিবী; দ্বিতীয়ত, বেহেশত; এবং তৃতীয়ত, মানবসত্তা সৃষ্টির রহস্য।
আমরা অনেকেই হয়তো একটি ঘটনা শুনেছি। আস ইবনে ওয়ায়েল মক্কা উপত্যকা থেকে একটি পুরোনো হাড় কুড়িয়ে এনে সেটি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বললেন, “এই হাড়টি চূর্ণ-বিচূর্ণ অবস্থায় দেখছেন, আল্লাহ কি এটিকে জীবিত করবেন?” রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, “হ্যাঁ, আল্লাহ তোমাকে মৃত্যু দেবেন এবং পুনরুজ্জীবিত করবেন।” তখন আল্লাহ একটি আয়াত নাজিল করলেন, ‘মানুষ আমার ক্ষমতা সম্পর্কে অদ্ভুত কথা বানায়, অথচ সে নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে যায় এবং বলে, হাড়ে আবার প্রাণ দেবে কে যখন তা পচে গলে যাবে?’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ৭৮)
ড. ইয়াসির কাদিরের বক্তৃতা অবলম্বনে।